ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা এবং এর কাজ ও ব্যবহার

ইস্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাকটেরিয়া। ব্যাকটেরিয়ার নাম শুনে ভয় পাওয়ার দরকার নেই। কারণ এটি একটি ভালো ব্যাকটেরিয়া। তবে এই ইস্ট এর ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে । এই কারণে প্রত্যেককে অবশ্যই ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা এবং ইস্ট এর কাজ কি সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত বুঝতে হবে। 

তো আপনিও কি ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করতে চাচ্ছেন ? তাহলে আজকের এই পোস্ট অবশ্যই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপনাকে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে ।

যে সকল পাঠকরা আজকের এই পোস্ট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়বে তারা ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে ভালো জ্ঞান অর্জন করতে পারবে। এছাড়াও এই ইস্ট এর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবে।

তবে তার আগে আমরা ইস্ট এর কাজ কি বা ইস্ট এর ব্যবহার সম্পর্কে আপনাদেরকে অবগত করব। চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে শুরু করি –

ইস্ট এর কাজ কি?

বন্ধুরা আমাদেরকে আগে এই ইস্ট এর কাজ কি সেটা সম্পর্কে ভালোমতো জেনে নিতে হবে। যদি আপনারা ভালোমতো ইস্ট এর ব্যবহার জানতে পারেন তাহলে ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা সেগুলোও বুঝতে পারে।

চলুন এখন ইস্ট এর কাজ কি বা ইস্ট এর ব্যবহার সম্পর্কে আপনাদেরকে ভালোমতো পরিষ্কার করে বুঝিয়ে দেই –

ইস্ট হচ্ছে মূলত এক ধরনের ছত্রাক প্রজাতির বস্তু। তবে এই ছত্রাকটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই ছত্রাকটি আমাদের নিত্যদিনের খাদ্য থেকে বিভিন্ন ধরনের শক্তি উৎপাদন করে।

এই ইস্ট ছত্রাকটি খাদ্য থেকে যে প্রক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদন করে তার নাম হচ্ছে গাজন প্রক্রিয়া। এই গাজন প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করে ইস্ট খাদ্যের মধ্যে থাকা শর্করা কে ভেঙ্গে অ্যালকোহল এবং কার্বন-ডাই-অক্সাইড বানিয়ে ফেলে।

এছাড়াও ইস্ট ছত্রাকটি খাদ্যের মধ্যে ঢুকে গাজন প্রক্রিয়ায় খাদ্যের কোষগুলো বৃদ্ধি করে এবং এই কোষগুলোর শক্তিও অনেক বাড়িয়ে দেয়।

ইস্ট এর ব্যবহার

উপরের লেখাগুলো পড়ে আশা করি প্রত্যেকে বুঝেছেন যে এই ইস্ট এর কাজ কি ? কিন্তু বন্ধুরা আপনারা জানলে অবাক হবেন যে এই ইস্ট এর ব্যবহার ও অনেক রয়েছে।

প্রায় প্রত্যেক ক্ষেত্রে আমরা ইস্ট ব্যবহার করে থাকি কারণ এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং উপকারী একটি ছত্রাক। তো এখন এই পর্যায়ে আমি আপনাদেরকে ইস্ট এর ব্যবহার সম্পর্কে অবগত করব এবং বিষয়গুলো পরিষ্কারভাবে বুঝিয়ে দেব।

ইস্ট মূলত রুটি কেক বা এই ধরনের বেকারি প্রজাতির খাদ্যগুলো বানাতে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করা হয়।  এছাড়াও এই গুরুত্বপূর্ণ ছত্রাকটিকে বিভিন্ন ধরনের ফার্মেন্টেড খাদ্য তৈরিতেও অনেক ব্যবহার হতে দেখা যায়। ফার্মেন্টেড খাদ্য হচ্ছে দই মিষ্টি বা এই ধরনের খাদ্য গুলো।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন হচ্ছে ইস্ট আমাদের খাদ্য গুলোকে আরো পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু বাড়িয়ে তোলে। খাদ্যের পুষ্টিগুণ খাদ্যের ভিতরে থাকা শক্তি এবং এর স্বাদ বাড়াতেই মূলত ইস্ট এর ব্যবহার করা হয়।

এছাড়া বিভিন্ন ধরনের  ঔষধ এবং প্রসাধনী খাদ্য তৈরিতেও নিত্যদিনে এই ইস্ট নামক ছত্রাকটি ব্যবহার করা হয়।

আশা করি যারা ইস্ট এর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করতে চাচ্ছিলেন তারা এই লেখাগুলো পড়ে সে সম্পর্কে সবকিছু জেনে গেছেন।

ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা

এখন আমরা আপনাদের সাথে পোস্টের গুরুত্বপূর্ণ টপিক ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা গুলো শুরু করব। যদিও ইস্ট আমাদের খাদ্যের সুস্বাদ এবং মান অনেক বাড়ি দেয় তবে এই ইস্ট এর ক্ষতিকর দিক ও অনেক পাওয়া যায়।

এই কারণে অবশ্যই আমাদের প্রত্যেককে এই ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা গুলো ভালোমতো বুঝতে হবে। যদিও প্রত্যেকটা খাবারেরই উপকারিতা এবং অপকারিতা আছে । কিন্তু কিছু কিছু খাবারের উপকারিতা থেকে অপকারিতা বেশি অর্থাৎ সেগুলো খাবারের ক্ষতি বেশি।

যদি আমরা এমন কোন খাবার বেশি পরিমাণে খাই যেগুলো থেকে ক্ষতি বেশি হয় তাহলে কিন্তু আমাদের শরীরের অনেক ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে।  এই কারণে প্রত্যেকটা খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই সেটার ভালো দিক এবং খারাপ দিক সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।

যাইহোক চলুন এখন আমরা বেশি কথা না বাড়িয়ে ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা করে জেনে নেই –

ইস্ট এর উপকারিতা

প্রত্যেকটা খাবারেরই অনেক ধরনের উপকারিতা পাওয়া যায়। ইস্ট ছত্রাক টিও এর  কোন ব্যতিক্রম নয় । তবে হ্যাঁ যেহেতু এটি অনেক ভালো খাবার তাই এটাতে ক্ষতি থেকে উপকারিতা বেশি। তবে অবশ্যই ইস্ট এর উপকারিতা গুলো এখন আমরা আপনাদেরকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দেবো।

আমদের শরীরে অনেক ধরনের ফ্রি র‌্যাডিক্যাল নামক পদার্থ পাওয়া যায় ।আর এই পদার্থ টি আমাদের শরীরের মধ্যে থেকে শরীরের মধ্যে ক্যান্সার সহ আরো অনেক মারাত্বক রোগ বেধে দিতে পারে। যখন আমরা ইস্ট সেবন করবো তখন শরীরের মধ্যে থাকা এই ফ্রি রেডিকেল  পদার্থগুলোর বিরুদ্ধে ইস্ট ছত্রাক টি প্রতিরোধ গড়ে তুলবে ।

ফাইবার নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ পদার্থ আছে যেটা হজম করা আমাদের শরীরের জন্য খুবই কার্যকরী । আর এই ইস্ট নামক ছত্রাক টি ওই ফাইবারের প্রধান উৎস অর্থাৎ ইস্ট থেকে অনেক ফাইবার উৎপাদন হয় । যখন ফাইবার পর্যাপ্ত পরিমাণে শরীরে প্রবেশ করবে তখন পেটের সমস্যাগুলো দূর করার পাশাপাশি যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা আছে সেটাও পরিপূর্ণভাবে সমাধান হয়ে যাবে।

ভিটামিন বি আমাদের শরীরের জন্য কতটা উপকারী সেটা প্রায় সকলেরই জানা । ইস্ট ছত্রাক থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি কপ্লেক্স উৎপাদন হয় যেটা আমাদের শরীরের মধ্যে শক্তি উৎপাদন, কোষের বৃদ্ধি বা কোষ বিভাজনের জন্য অনেক কার্যকরী । এছাড়াও এই ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । এটা ছাড়াও আমাদের শরীরে রক্তে থাকা লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন এর ক্ষমতাও এই ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর আছে।

ইস্ট এন্টিঅক্সিডেন্ট এর ও ভালো উৎস । আর এই এন্টিঅক্সিডেন্ট গুলো আমাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকলে শরীরের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম হয় এবং আরো স্বাস্থ ঝুঁকি হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে।

এগুলো ছাড়াও ইস্টের মধ্যে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পাওয়া যায় যেগুলো আমাদের শরীরে থাকা ব্যাকটেরিয়া গুলোর জন্য অনেক ভালো কাজ করে।

তো এগুলো ছিল মূলত ইস্ট এর উপকারিতা। তবে হ্যাঁ ইস্ট এর উপকারিতা থাকার পাশাপাশি এই ইস্ট এর ক্ষতিকর দিক ও রয়েছে যেগুলো সম্পর্ক আপনাদেরকে জানানো হবে।

ইস্ট এর ক্ষতিকর দিক

প্রতিটা জিনিসেরই যেহেতু কিছু খারাপ দিক এবং ভালো দিক থাকে তাই ইস্ট এর ও কিছু খারাপ দিক রয়েছে। তবে এর ভালো দিকের থেকে খারাপ দিকের পরিমাণ অনেক কম।

এই কারণে আমাদেরকে অবশ্যই ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা এর মধ্য থেকে ইস্ট এর ক্ষতিকর দিকগুলো এখন বুঝতে হবে । চলুন শুরু করি  –

ইস্ট সেবন করার ফলে আমাদের শরীরের ভেতরে থাকা এলার্জি জেগে উঠতে পারে এবং এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে । তবে হ্যাঁ যাদের শরীরে বেশি পরিমাণে এলার্জি থাকে শুধুমাত্র তাদের শরীরেই সমস্যাটি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

অতিরিক্ত ইস্ট খাওয়ার ফলে আমাদের পেটের মধ্যে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাটি বেড়ে উঠতে পারে আর এই কারণে পেট ফুলে যেতে পারে । গ্যাস্ট্রিক এর সমস্যা বেড়ে গেলে তখন আবার আমাদের পেটের মধ্যে ব্যথাও শুরু হয়ে যেতে পারে।

যাদের শরীরের মধ্যে আগে থেকে ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা আছে তাদের জন্য ইস্ট কিছুটা ক্ষতিকর হতে পারে । অর্থাৎ এটির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা গেলে ত্বক এর মধ্যে চুলকানি বা বিভিন্ন ধরনের ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।

উপরে বর্ণিত এগুলোই মূলত ইস্ট এর ক্ষতিকর দিক পাওয়া যায়। তবে হ্যাঁ ইস্ট সেবন করার সময় যদি আপনার মধ্যে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

এছাড়াও যদি ইস্ট সেবনের ফলে প্রতিবারই আপনার শরীরে এলার্জি দেখা দেয় তাহলে এই ইস্ট না খাওয়াই আপনার জন্য ভালো হবে।

আর হ্যাঁ যে সকল মহিলারা গর্ভবতী আছেন এবং সন্তানকে দুধ পান করান তারা যদি ঈশ্বর করতে চায় তাহলে অবশ্যই এটি খাওয়ার আগে ডাক্তারের সাথে কথা বলতে হবে এবং ডাক্তার যদি অনুমতি দেয় তবেই আপনি সেবন করবেন।

আশা করি যারা ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন তারা সবকিছু বুঝে গেছেন। প্রত্যেকটা জিনিসেরই কিন্তু কিছু খারাপ থেকে এবং ভালো দিক আছে। তবে ইস্ট ছত্রাক এর ক্ষেত্রে এর খারাপ দিকের তুলনায় ভালো দিক অনেক বেশি।

এই কারণে চাইলেই ইস্ট সেবনের ফলে আমরা আমাদের শরীরকে আরো আগের থেকে উন্নত করতে পারি।

পরিশেষে

আজকের পোস্টে প্রধানত আমরা ইস্ট এর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে পাঠকদের কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করছি । তো আশা করি এই সবগুলো বিষয়ই আপনারা একদম ক্লিয়ার ও পরিষ্কার ভাবে বুঝে গেছেন।

মনে রাখবেন যেকোনো কিছু খেয়ে যদি আপনি উপকার না  পান, অথবা কোনো কিছু খেলে যদি আপনার শরীরে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়, তাহলে সে জিনিস না খাওয়াই আমাদের জন্য উত্তম।

যাইহোক, পোস্ট পড়ে যদি কোনো কিছু বুঝতে না পারেন তাহলে সেটা আমাদের কে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। আর চাইলে পোস্ট শেয়ার ও করতে পারেন।

ভালো লাগতে পারে

Back to top button