অপরিচিতা গল্পের মূল কথা ও অপরিচিতা গল্পের বিষয়বস্তু

আসসালামু আলাইকুম আপনি কি অপরিচিতা গল্পের মূল কথা এবং অপরিচিতা গল্পের বিষয়বস্তু সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। তাহলে আজকের এই পোস্ট পড়লে আপনারা অপরিচিতা গল্পের মূল বিষয়বস্তু সহ অপরিচিতা গল্পের মূলভাব গুলো জানতে পারবেন।
দ্বাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রথম পত্র বইয়ের প্রথম গল্পটির নাম হচ্ছে অপরিচিতা। আর এই অপরিচিতা গল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন।
অপরিচিতা গল্পটি ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষায় প্রশ্ন আসার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি গল্প। যেহেতু সামনেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা আসতেছে তাই আমরা অপরিচিতা গল্পের বিষয়বস্তু এবং অপরিচিতা গল্পের মূল কথা সবগুলো সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দেব।
অপরিচিতা গল্পের মূল বিষয়বস্তু
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অপরিচিতা গল্পের মধ্যে এই অপরিচিতাগল্পের মূল বিষয়বস্তুটা খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
এই গল্পে তিনি মূলত নারীদের মর্যাদা বা তাদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করার চেষ্টা করেছেন। আগের যুগে নারীদের অনেক কম সম্মান দেওয়া হতো তারই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই গল্পটি লিখেছিলেন।
অপরিচিতা গল্পে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কল্যাণী নামের একটি মেয়ের চরিত্র বর্ণনা করে এই নারীর অধিকার কে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।
এটাই ছিল মূলত অপরিচিতা গল্পের মূল বিষয়বস্তু সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। আমরা যখন অপরিচিতা গল্পের মূল কথা এবং অপরিচিতা গল্পের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানব তখন আরও বিস্তারিতভাবে জেনে নেব।
অপরিচিতা গল্পের মূল কথা বা অপরিচিতা গল্পের মূলভাব
এখন আমরা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অপরিচিতা গল্পের মূল কথা এবং অপরিচিতা গল্পের মূলভাব সম্পর্কে আলোচনা করব।
যদি আপনারা আমার লেখা এই অপরিচিতা গল্পের মূল কথা টি পড়েন তাহলে অপরিচিতা গল্প সম্পর্কে পরিষ্কার একটা ধারণা পাবেন তাহলে এখান থেকে সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর খুব সহজে দেওয়া যাবে।
অপরিচিতা গল্পে অনুপম নামে একটি চরিত্র আছে যিনি গল্পগত হিসেবে পুরো গল্পটি বর্ণনা করেছেন। এছাড়াও এই অনুপমকে অপরিচিতা গল্পের নায়ক ও বলা যেতে পারে।
অনুপম কে অপরিচিতা গল্পের নায়ক এবং কল্যাণী নামের একটি মেয়েকে এই গল্পের নায়িকা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর এই নায়ক অনুপম ছিল শিক্ষিত কিন্তু ব্যক্তিত্বসম্পন্নহীন ব্যক্তি ।
অর্থাৎ অনুপম ছিল একটু বোকাসোকা টাইপের এবং তার একজন মামা ছিল যিনি অনুপম দের সংসার চালাতেন। এই কারণে অনুপমাকে তার ওস্তাদ শিমুল ফল এবং মাকাল ফলের সাথে তুলনা করতেন।
অনুপমের বয়স ছিল ২১ এবং তার মামার বয়স ছিল 27। আর অপরিচিতারা বাবার বয়স ছিল ৪০ এর আশেপাশ। এবং শম্ভুনাথ সেন ছিল ভালো ব্যক্তি এবং ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন মানুষ।
তার এই মামার কারণেই মূলত গল্পটিতে বেশ টুইস্ট আছে। অনুপমের বাবা পেশায় ওকালতি করতেন। এবং তার মা অনেক গরীব পরিবার পরিবার থেকে এসেছেন।
অনুপমের মামা ছিল একটু লোভী টাইপের এবং তিনিএই কারণে অনুপমের জন্য গরিব ঘরের মেয়ে বিয়ে করাতে চাইতেন ।
এর কারণ গরিব ঘরের মেয়ে এসে যেন তার বাড়িতে মাথা নিচু করে থাকে। এছাড়াও মামা গরিব ঘরের মেয়ে বিয়ে করানোর পাশাপাশি ওই মেয়ের বাবার থেকে বেশ ভালো অংকের টাকা যৌতুক হিসেবে ও চায়।
অনুপমের একজন বন্ধু ছিল যার নাম হরিশ এবং এই হরিশ কানপুরে কাজ করতো। হরিস এসে তার মামাকে একটি মেয়ের খবর দেয়।
মেয়েটির নাম ছিল কল্যাণী এবং অনুপম ও এই বিয়েতে রাজি হয়। কল্যাণীর বাবা ছিল পেশায় ডাক্তার।
এরপর তাদের বিয়ে পাকা হওয়ার পরে অনুপমের মামা সহ বিয়ে বাড়িতে চলে যায় বিয়ে করার জন্য। সেখানে গিয়ে দেখা গেল কল্যাণীর বয়স ১৫ বছর।
কিন্তু মামা যেহেতু লোভী মানুষ তাই তিনি বিয়ের আগেই গহনা এবং সমস্ত জিনিস বুঝিয়ে নেওয়া শুরু করলেন।
বিয়ের আগে যখন মামা কনের বাবার দেওয়া গহনা গুলো পেয়েছিলেন তখন তিনি সাথে করে স্যকরা কে নিয়ে গিয়েছিলেন ওই গহনা গুলো আসল নাকি নকল সেটা পরীক্ষা করার জন্য।
কিন্তু এই বিষয়টা কল্যাণীর বাবা শম্ভুনাথ সেন এর ভালো লাগেনি। শমভুনাথ সেন এর আত্মসম্মান বোধে আঘাত করেছিল এই ঘটনাটি।
এরপর যখন এই বিষয়টি কল্যাণী জানতে পারে তখন সে সাথে সাথে বিয়ের পিঁড়িট থেকে উঠে যায় এবং বিয়ে করতে চায় না।
এর সাথে কল্যানীর বাবাও একমত হয় এবং নিজের সাহস দেখিয়ে সাথে সাথে সেখানে বিয়ে ভেঙ্গে দেয় বিয়ের দিনেই। এই ঘটনাটি বোঝানোর জন্যই মূলত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অপরিচিতা গল্পটি লিখেছিলেন।
অপরিচিতা গল্পের মূল কথা বলতে গেলে আরো একটা বিষয় বলতে হবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানে যৌতুক নেওয়ার বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াতে চেয়েছেন।
বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার পরে শম্ভুনাথ সেন বড় যাত্রীকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু এই ঘটনাটিতে মামার অনেক রাগ হয় এবং তিনি অনেক রেগে যায়।
এরপর অনুপম ও অনেক কষ্ট পায় এবং বাড়িতে এসে খুব কান্না করে। অনেকদিন পর আবার অনুপম যখন কলকাতায় যায় তখন সেখানে রেল গাড়িতে বসে কল্যাণী মেয়েটিকে দেখেছিল।
কিন্তু হয়তো মেয়েটি তাকে চিনতে পারে নাই। এই গল্পটি মূলত এখানেই শেষ করে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
উপরের লেখাগুলো পড়লে আপনারা অপরিচিতা গল্পের বিষয়বস্তু এবং অপরিচিতা গল্পের মূল কথা বুঝতে পারবেন। এখানে আমরা অপরিচিতা গল্পের মূলভাব ও আপনাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি।
অপরিচিতা গল্পের মূল বক্তব্য আলোচনা কর
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অপরিচিতা গল্পের মাধ্যমে সেখানে দুইটি চরিত্র বিশেষভাবে উপস্থাপন করেছিলেন একটি হচ্ছে কল্যাণী এবং আরেকটি হচ্ছে শম্ভুনাথ বাবু ।
কল্যাণী হচ্ছে গল্পটির নায়িকা চরিত্রে এবং শম্ভুনাথ বাবু হচ্ছে নায়িকার বাবার চরিত্র ছিলেন। এখানে তিনি এই দুই চরিত্রের মাধ্যমেই বিয়ের যৌতুক প্রথার সাথে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেছেন।
এছাড়াও বিয়েতে যেভাবে বর পক্ষ জোর করে এবং কনে পক্ষের সাথে খারাপ ব্যবহার করে এটাকেউ তিনি এই গল্পের মাধ্যমে প্রতিবাদ করেছেন।
আশা করি আপনারা অপরিচিতা গল্পের মূল বক্তব্যও খুব ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। যেটা এই পোস্টে বুঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
শেষকথা
আজকের পোস্টে আমরা পাঠকদের কে সহজ ভাষায় অপরিচিতা গল্পের মূল কথা এবং অপরিচিতা গল্পের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
এখানে আমরা চেষ্টা করেছি এমন ভাবে গল্পটি কে উপস্থাপন করতে যাতে শিক্ষার্থীরা এই গল্প থেকে আশা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর গুলো খুব সহজে দিতে পারে।
এখানে বলে রাখা ভালো আজকের পোস্টে আলোচিত অপরিচিতা গল্পের মূল কথা টি পড়লে আপনারা কিন্তু কোন নৈর্ব্যক্তিক কিংবা জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না ।
আমরা শুধুমাত্র অপরিচিতা গল্পের বিষয়বস্তু কে তুলে ধরেছি যাতে পোস্টটি পড়লে আপনারা অপরিচিতা গল্প থেকে আসা যাবতীয় সৃজনশীলের গ এবং ঘ প্রশ্নগুলোর উত্তর সঠিকভাবে দিতে পারবেন।
আর হ্যাঁ আমাদের পোস্টে আলোচনা করা অপরিচিতা গল্পের মূল কথা এবং অপরিচিতা গল্পের মূলভাব আপনি বুঝতে পেরেছেন কিনা সেটা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
আর হ্যাঁ কিছু যদি বুঝতে না পারেন তাহলে আমাদের ফেসবুক পেজে নক দিয়েও সেটা জিজ্ঞেস করবেন বা চাইলে কমেন্ট করেও প্রশ্নটি জিজ্ঞেস করতে পারেন আপনার সাথে সাথে উত্তর দিয়ে দেব।