নূরানী পদ্ধতিতে নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি বিস্তারিত
নামাজ সঠিকভাবে আদায় করার জন্য নামাজের ওয়াজিব সমূহ মানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার।এই কারণে আমাদের মুসলমানদের জন্য এই নূরানী পদ্ধতিতে নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি সেগুলো সম্পর্কে ভালো মতো জানতে হবে।
এছাড়াও এই নামাজের ওয়াজিব সমুহ কি কি সেটাও ভালোমতো পরিষ্কারভাবে বুঝে নিতে হবে । তো বন্ধুরা আপনারাও কি এই নূরানী পদ্ধতিতে নামাজের ওয়াজিব সমূহ জানতে চান ? তাহলে আজকের এই পোস্ট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অবশ্যই পরবেন।
আজকের পোস্ট যদি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবগুলো টপিক ভালো ভাবে পড়েন । তাহলে আপনারা এই নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি সেগুলো সম্পর্কে ভাল মত একটি ধারণা পাবেন এবং পরবর্তীতে নামাজ পড়তে খুব সুবিধা হবে।
তাহলে বন্ধুরা চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে আজকের নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা শুরু করে দেই –
নামাজের ওয়াজিব কয়টি
নূরানী পদ্ধতিতে নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার আগে প্রত্যেককে আগে এই নামাজের ওয়াজিব কয়টি সে সম্পর্কে ভালো মত জেনে নিতে হবে।
নামাজ পড়ার যে নিয়মগুলো আছে সে নিয়ম গুলো যদি না মেনে নামাজ পড়া হয় তাহলে নামাজ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম। এছাড়াও নামাজের মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ওয়াজিব কিংবা সুন্নত বিষয় আছে সেগুলো যদি আমরা ভঙ্গ করি তাহলেও আমাদের নামাজ হবে না।
তো যারা জানে না যে নামাজের ওয়াজিব কয়টি তাদের উদ্দেশ্যে বলি নামাজের ওয়াজিব ১৪ টি। তবে হ্যাঁ এই নামাজের ১৪ টি ওয়াজিব একসাথে কোন একটি হাদিসে বর্ণিত হয়নি।
এগুলো একটু একটু করে বিভিন্ন হাদিসে খুঁজে পাওয়া যায়। অর্থাৎ ধরুন একটি হাদিসে একটি ওয়াজিব বর্ণিত আছে আবার আরেকটা হাদিসে আরেকটা বর্ণনা করা আছে।
এভাবে ওলামায়ে কেরামগণ এবং বড় বড় হাদিস বিশারদগণ বিভিন্ন হাদিস চর্চা করার মাধ্যমে এই ওয়াজিবগুলোকে খুঁজে বের করেছে এবং সেই জন্য আমরা নামাজের ওয়াজিব ১৪ টি পেয়েছি এবং সে অনুযায়ী আমল করি।
নূরানী পদ্ধতিতে নামাজের ওয়াজিব 14 টি সম্পর্কে বিস্তারিত
উপরে আপনারা পরিষ্কারভাবে জেনে এসেছেন যে নামাজের ওয়াজিব ১৪ টি। কিন্তু শুধুমাত্র এই ওয়াজিবের সংখ্যাটা জানলে আপনারা এই নামাজের ওয়াজিবগুলো ঠিকভাবে পালন করতে পারবেন না।
যেহেতু নামাজ সঠিকভাবে হওয়ার জন্য ওয়াজিব গুলোকে মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি । তাই আগে আপনাদেরকে এই নামাজের ওয়াজিব কি কি সেটা ভালো করে বুঝতে হবে। সেটাই এখন আপনাদের সাথে ব্যাখ্যা করা হবে –
১. সূরা ফাতিহা পাঠ করা: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর হাদিস থেকে পরিষ্কার ভাবে পাওয়া যায় যেকোনো নামাজ পড়ার সময় সুরা ফাতিহা তেলাওয়াত না করলে সেই নামাজ হয় না।
এই কারণে যখনই আমরা নামাজ পড়বো তখনই প্রত্যেক রাকাতে তাকবীরে তাহরীমা দেওয়ার পর সূরা ফাতিহা পাঠ করতে হবে। আর এই সম্পূর্ণ সূরাটি পাঠ করা একটি নামাজের ওয়াজিব সমূহ এর মধ্যে একটি।
২. সূরা মিলানো: যখন আমরা নামাজ আদায় করা শুরু করবো তখন প্রথমে সূরা ফাতিহা পাঠ করে সাথে অন্য যেকোনো আরেকটি সূরা মিলিয়ে পড়তে হবে।
তবে এখানে চাইলে ছোট ছোট তিন টি আয়াত পাঠ করা যাবে কিংবা বড় একটি আয়াত পাঠ করা যাবে যেন সেই ছোট তিন আয়াতের সমান হয়।
আরে হ্যাঁ এই সূরা মিলানো কিন্তু সুরা ফাতেহার পর অন্য একটা সূরা মিলাতে হবে অর্থাৎ সুরা ফাতেহা বাদে যেকোনো সূরা।
৩. প্রথম দুই রাকাতে কেরাত নির্ধারিত করা : এই নূরানী পদ্ধতিতে নামাজের ওয়াজিব টা অনেকেই বোঝেনা। তাদের জন্যই আমি বিষয়টা পোস্টে পরিষ্কার কে সহজ ভাবে বুঝিয়ে দেবো।
এখানে প্রথম দুই রাকাতে কেরাত নির্ধারিত করা বলতে বোঝানো হয়েছে যখন আপনি কোন ফরজ চার রাকাত নামাজ আদায় করবেন। তখন সেই চার রাকাতের মধ্যে প্রথম দুই রাকাতে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর অন্য আরেকটি সূরা মিলাতে হবে।
কিন্তু ফরজ নামাজের পরের দুই রাকাতে সুরা ফাতেহার পর আর কোন সূরা মিলাতে হয় না। তবে হ্যাঁ যদি আপনি কোন সময় সুন্নত চার রাকাত নামাজ পরেন তাহলে আপনাকে প্রত্যেক রাকাতের ক্ষেত্রে সুরা ফাতেহার পর আরেকটি সূরা মিলাতে হবে।
৪. ক্রম ঠিক রাখা: এখানে ক্রোম ঠিক রাখা বলতে বোঝানো হয়েছে যে, নামাজ পড়ার সময় কিন্তু আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে হয়।
যেমন রুকু করতে হয়, সিজদা করতে হয় আবার কেরাত পড়তে হয়। তো ক্রম ঠিক রাখা বলতে বোঝানো হয়েছে এই সমস্ত বিষয়গুলো যেন আমরা একের পর একটা করতে থাকি।
যদি আমরা আগে সেজদা করি পড়ে রুকু করি তাহলে সেটা কিন্তু নামাজ হবে না। এইজন্য প্রথমে আমাদেরকে সুরা ফাতেহা পাঠ করতে হবে তারপর অন্য সূরা তারপর রুকু করতে হবে তারপর গিয়ে সেজদা করতে হবে।
আর এই ক্রম ঠিক রাখা বা নামাজের তারতিব ঠিক রাখা কে নামাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ ওয়াজিব ধরা হয়।
৫. সঠিক ভাবে কাওমা করা: অনেকেই হয়তো এই কওমা করা বিষয়টি বুঝতেছেন না। তাদেরকে বলি এই বিষয়টি হচ্ছে যখন আপনি রুকু করবেন তখন রুকু করার পরে যেন আবার সোজা হয়ে দাঁড়ান।
অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন মানুষ নামাজ পড়ার সময় রুকু করে না দাঁড়িয়েই আবার সরাসরি সেজদায় চলে যায়। কিন্তু যদি আপনি এই কাজটি করেন তাহলে আপনার নামাজের ওয়াজিব ভঙ্গ হয়ে যাবে।
সুতরাং যখন আমরা যখন নামাজ পড়বো সেই নামাজের সময় রুকু করার পর আবার সোজা হয়ে দাঁড়াবো এবং সেখানে কিছু সময় অতিবাহিত করার পরে সেজদা করব।
৬. জলসা করা : এই জলসা করা বিষয়টি নামাজের অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আর বেশিরভাগ মানুষ এই বিষয়টি না বুঝে নামাজ ভুল করে থাকে। যদি আপনি জেনে বুঝে বিষয়টি ভুল করেন তাহলে আপনার গুনাহ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তো মসজিদে গিয়ে দেখা যায় অনেক মানুষ নামাজ পড়ার সময় একটি সেজদা দেওয়ার পর না উঠে আবার আরেকটি সেজদা দিয়ে ফেলে। এ বিষয়টি করলে আপনার নামাজের ওয়াজিব ছুটে যাবে।
সুতরাং যখন আপনি নামাজ পড়বেন তখন প্রথম একটি সেজদা দেওয়ার পরে সোজা হয়ে বসবেন এবং কিছু অপেক্ষা করার পরে সেখানে দোয়া পড়ে তারপর আরেকটি সেজদায় যাবেন। এইভাবে নামাজ পড়লে আপনার আর ওয়াজিব ছুটে যাবে না ।
৭. কেরাত জোরে কিংবা আসতে পড়া: যখন আপনি জামাতের সাথে নামাজ আদায় করবেন এবং যদি আপনি ইমাম হয়ে থাকেন তাহলে এই ওয়াজিবটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং পালন করা অত্যাবশ্যক।
যদি বাড়িতে একা একা নামাজ পড়েন বা ইমাম না হন তাহলে বিষয়টা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়। এখানে ফজর, মাগরিব এবং এশার নামাজ জামাতের সাথে আদায় করার সময় অবশ্যই ইমাম সাহেবকে প্রথম দুই রাকাতের কেরাতগুলো জোরে জোরে পড়তে হবে।
আর ফরযের প্রথম দুই রাকাত বাদে বাকি নামাজগুলোর কেরাত নিচু স্বরে পড়বে। কিন্তু জোহরের নামাজ এবং আসরের নামাজ আদায় করার সময় ইমাম কেও জোরে কেরাত পড়তে হবে না তখন সবাই মনে মনে কেরাত তেলাওয়াত করবে।
যদি এভাবে কোন ইমাম সাহেব জোরে কিংবা আস্তে নিয়ম না মেনে নামাজ পরান তাহলে তার ওয়াজ ভেঙ্গে যাবে এবং নামাজ ও ভঙ্গ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।
৮. অতিরিক্ত তাকবীর দেওয়া: আমরা দৈনিক যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি এই নামাজ গুলোর ক্ষেত্রে এই ওয়াজিবটি নয়। অর্থাৎ এখানে যে অতিরিক্ত তাকবীর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এটা শুধুমাত্র ঈদের নামাজ কিংবা অন্য কোন নামাজের জন্য বলা হয়েছে।
যখন আমরা ঈদের নামাজ পড়বো তখন যেন অতিরিক্ত তাকবীর দেই, এটা একটা নূরানী পদ্ধতিতে নামাজের ওয়াজিব গুলোর মধ্যে একটি। তবে হ্যাঁ এই অতিরিক্ত তাকবীর দেওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন মাজহাবের নিয়ম আলাদা আলাদা রয়েছে।
হানাফি মাজহাবের ক্ষেত্রে ঈদের নামাজে অতিরিক্ত ৬ তারবির দেওয়া হয় অর্থাৎ প্রথম রাকাতে অতিরিক্ত তিন তাকবীর এবং দ্বিতীয় রাকাতে অতিরিক্ত তিন তাকবীর। আবার অন্যান্য কোন মাযহাবে 12 তাকবীর বা তারও অধিক তাকবীর দেওয়ার কথা বলা আছে। আপনি যে মাযহাবের নিয়ম অনুসারে নামাজ আদায় করেন সেই মাযহাব অনুযায়ী এই অতিরিক্ত তাকবীর দিবেন।
৯. কাদায়ে ওলা করা: এই কাঁদায় ওলা বিষয়টি আমাদের প্রত্যেককে জানতে হবে কারণ দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ক্ষেত্রে আমাদের এটি প্রতিবারই দরকার হয়।
যদি আমরা দুই রাকাত নামাজ আদায় করি তাহলে এই বিষয়টি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়। কিন্তু যখন আমরা কোন চার রাকাত কিংবা ২ এর অধিক কোন রাকাত আদায় করতে যাব তখনই আমাদেরকে এই ওয়াজিব টি পালন করতে হবে।
এখানে দুই রাকাত নামাজ আদায় করার পর একটা বৈঠক দিয়ে সেখানে আত্তাহিয়াতু দোয়াটি পড়তে বলা হয়েছে। যদি চার রাকাত নামাজ আদায় করেন তাহলে প্রথম দুই রাকাত নামাজ আদায় হওয়ার পরে একটা বৈঠক দিবেন এবং আত্তাহিয়াতু দোয়া উপরে আবার দুই রাকাত নামাজ আদায় করবেন।
আবার যখন তিন রাকাত কোন নামাজ আদায় করবেন তখন প্রথমে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে একইভাবে বৈঠকে আত্তাহিয়াতু দোয়া পড়ে বাকি এক রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে।
১০. দোয়া কুনুত ব অন্য দোয়া পড়া : যখন আমরা এশার নামাজের সালাত আদায় করা শেষে বিতের নামাজ পড়বো তখনই আমাদেরকে এই ওয়াজটি পালন করতে হবে।
যদিও এই বেতের নামাজের অনেক নিয়ম আছে কিন্তু এই দোয়া কুনুত পড়া একটি নিয়ম এবং এটি একটি ওয়াজিব কাজ।
বেতের নামাজ পড়ার সময় দুই রাকাত নামাজ হয়ে যাওয়ার পরে একটা বৈঠক দিয়ে তারপর দাঁড়িয়ে সুরা ফাতেহার পর অন্য একটি সূরা মিলিয়ে অতিরিক্ত আরেকটি তাকবীর দেওয়ার পরে দোয়া কুনুত পড়া হচ্ছে নামাজের একটি ওয়াজিব।
তবে আরো বিভিন্ন হাদিসে এই বেতের নামাজের অন্যান্য নিয়ম বর্ণিত আছে সেগুলো নিয়ম মেনেও বিতের নামাজ আদায় করা যায়।
১১. তাদিলে আরকান: এই তদিলে আরকান করা বিষয়টি অনেক মুসলমান ছেলেরাই বোঝেনা। অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন ব্যক্তিগণ নামাজ আদায় করতে গেলে অনেক তাড়াহুড়া করে নামাজ পড়ে ।
যদি আপনি তাড়াহুড়া করে নামাজ আদায় করতে যান তখন সেখানে আপনার কেরাত ভুল হতে পারে এবং নামাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো মিসটেক হয়ে যেতে পারে।
এই কারণে এই ওয়াজিবটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ধরা হয়। এখানে বলা হয়েছে নামাজের প্রত্যেকটা কাজ করার সময় সেখানে এক তাজবিঃ পরিমাণ অপেক্ষা করতে হবে।
অর্থাৎ যখন আমরা রুকু করব সেজদা করব কিংবা নামাজের অন্য কোন কাজ করব তখন সেখানে অবশ্যই এক তাজবীহ পরিমাণে অপেক্ষা করতে হবে যাতে করে আমাদের শরীরের প্রত্যেকটা অঙ্গ যথাযথ স্থানে পৌঁছে যায়।
যদি এই কাজ না করে আমরা নিজের ইচ্ছামত তাড়াহুড়া করে নামাজ আদায় করি তাহলে আমাদের নামাজের মধ্য থেকে এই ওয়াজিবটি ছুটে যাবে।
১২. আত্তাহিয়াতু পড়া : যদিও এই ওয়াজিব টি সম্পর্কে আমরা উপরের পয়েন্ট এই আপনাদেরকে বলে দিয়েছি। কিন্তু এটা আপনাদেরকে ভালোমতো বুঝতে হবে এবং পালন করতে হবে।
অনেকেই আছে যারা আত্তাহিয়াতু দোয়াটি পারেনা তাদের উচিত দ্রুত দোয়াটি শিখে নেওয়া এবং নামাজে যথেষ্ট স্থানে দোয়াটি পড়া।
তো যখন আমরা দুই রাকাতের পর একটি বৈঠকে বসবো তখনই সেখানে আত্তাহিয়াতু পড়তে হবে । আশা করি এই নূরানী পদ্ধতিতে নামাজের ওয়াজিব টি আপনারা ভালোভাবে বুঝেছেন।
১৩. সালাম ফিরানোর: হাদিসে বর্ণিত আছে আল্লাহু আকবার বলে নামাজ শুরু হয় এবং আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলে নামাজ শেষ হয়। তো যখন আমরা নামাজ শেষ করবো তখন যেন সালাম দিয়ে নামাজ শেষ করি।
কারণ নবীজির হাদিসে পাওয়া যায় আমাদেরকে অবশ্যই আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ বলে ডান দিকে এবং বাম দিকে সালাম ফিরিয়ে নামাজ সমাপ্ত করতে হবে।
তবে হ্যাঁ এখানে কোন তাড়াহুড়া করা যাবে না। অনেকেই দেখা যায় তাড়াতাড়ি কাঁধ ঘুরিয়ে আবার আরেক দিকে ঘুরিয়ে নেয় এবং তাড়াতাড়ি নামাজ শেষ করা । এভাবে করলে আপনার ওয়াজ ছুটে যেতে পারে।
১৪. নামাজের তারতিব যথাযথ রাখা: আমরা উপরে যে সমস্ত ওয়াজিব বর্ণনা করেছি এগুলো সবগুলোই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর হাদিস থেকে পাওয়া যায়।
তো এই তারতিব ঠিক রাখা বলতে বোঝানো হয়েছে যখন আমরা নামাজ আদায় করব তখন যেন নামাজের ওয়াজিব গুলো ঠিক ঠিকভাবে পালন করি। যাতে কোনো ভুল না হয় ।
এগুলো যথাযথভাবে পালন করার পাশাপাশি যে ওয়াজিব টি আগে আছে অবশ্যই সেটি আগে পাল করতে হবে এবং যেটি পড়ে আছে সেটি পড়েই পালন করতে হবে। এভাবেই ওয়াজিবগুলো পালন করাকেই নামাজের তারতিব ঠিক রাখা বলা হয়।
উপরে আমরা যে সকল নূরানী পদ্ধতিতে নামাজের ওয়াজিব সমূহ শেয়ার করলাম এগুলো সাধারণত হাদিস থেকে পাওয়া যায়। তো আমাদের কে অবশ্যই এই ওয়াজ গুলো ভালো মতো পড়তে হবে জানতে হবে তারপর নামাজে ঠিক ঠিক ভাবে আদায় করতে হবে।
নামাজের ওয়াজিব ছুটে গেলে করণীয়
অনেক সময় দেখা যায় তাড়াহুড়া করতে নামাজ পড়তে গিয়ে আমাদের নামাজের বিভিন্ন বিষয়গুলো পড়তে ভুলে যায়। কিন্তু যদি আপনি নামাজের মধ্যে থাকা ফরজ বিষয়গুলো ভুলে যান তাহলে তখন আবার নতুন করে আপনাকে নামাজ পড়তে হবে।
কিন্তু হ্যাঁ যদি নামাজে থাকা ওয়াজিব বিষয়গুলো পড়তে ভুলে যান তাহলে আপনি নামাজের মধ্যে আরেকটি কাজ করে সেটাকে ঠিক করে নিতে পারবেন।
এজন্য আপনাকে অবশ্যই নামাজের ওয়াজিবসমূহ ভালোমতো জানতে হবে এবং তারপর নামাজের ওয়াজিব ছুটে গেলে করণীয় কি সেটা বুঝতে হবে ।
যদি আপনার নামাজের মধ্যে থাকা কোন ওয়াজিব ছুটে যায় তাহলে তখন আপনি শেষের বৈঠকে আত্তাহিয়াতু পড়ে ডান দিকে সালাম ফিরাবেন তারপর আবার দুইটি সেজদা দিয়ে উঠে আবার দোয়াগুলো পড়ে সম্পূর্ণভাবে সালাম ফিরবেন ।
এই অতিরিক্ত দুই সেজদা কে সাহু সাজদা বলা হয়। যদি ঠিকভাবে সাহু সেজদা দিতে পারেন তাহলে আশা করা যায় আপনার নামাজ পরিপূর্ণভাবে শুদ্ধ হয়ে যাবে।
কিন্তু এখানে মনে রাখতে হবে সাহু সাজদা তখনই দেওয়া যাবে যখন আপনার নামাজের মধ্যে থাকা ওয়াজিব কাজের মধ্যে একটি ভুলে যাবেন। তাই অবশ্যই ওয়াজিব গুলো মুখস্ত করতে হবে।
পরিশেষে
আজকের এই পোস্টে আমরা নূরানী পদ্ধতিতে নামাজের ওয়াজিব কয়টি ও কি কি সে সম্পর্কে আপনাদের কে পরিষ্কার ধারণা দিয়েছে। আমরা এমনভাবে আপনাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছি যাতে আপনারা নামাজের ওয়াজিবসমূহ ভালোমতো বুঝতে পারেন এবং সেগুলো ভালোমতো নামাজে আদায় করতে পারেন।
একজন মুসলমান হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের উচিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া এবং এই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নিয়ম কানুন গুলো সঠিকভাবে জেনা।
তো যদি এই নামাজের ওয়াজিব সমূহ বুঝতে কোন সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবেন । আর চাইলে আপনার বন্ধুদেরকে শেয়ার করে এগুলো জানার সুযোগ করে দিতে পারেন।